লকডাউন সফল করতে পেটে ভাত থাকা চাই

শুক্রবার, ১০ এপ্রিল ২০২০ | ৯:২৭ অপরাহ্ণ | 596

লকডাউন সফল করতে পেটে ভাত থাকা চাই

বাংলাদেশে অত্যন্ত সংবেদনশীলতার সঙ্গে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। তা না হলে অনাহারে মৃত্যু বাড়বে। অসংখ্য মানুষের চাকরি যাবে। ধীরে ধীরে খাদ্যের সঙ্কট তৈরি হবে। বাংলাদেশে যার পরিণতি হবে অত্যন্ত মারাত্মক এবং ভয়াবহ।

কয়েকদিন পর যদি মানুষের হাতে টাকা না থাকে, খাবার না থাকে, মানুষকে ঘরে আটকে রাখা মুশকিল হয়ে যাবে। তার ফলে করোনাভাইরাস মোকাবিলা করতে যে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেটি ব্যর্থ হবে। আর এই পরিস্থিতিতে মানুষ যদি ঘর থেকে বেরতে শুরু করে, তাহলে সমস্যা আরও বাড়বে। বর্তমানে কেউ যখন ভাবছেন কী করে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচা যাবে, কেউ তখন ভাবছেন, কোথায় দুটো ভাত পাওয়া যাবে!‌ কাজেই তার ব্যবস্থা করতে হবে। এমতাবস্থায় আমাদের দেশে কখনোই লকডাউন শতভাগ সফল হবে না। কারন আপনারা লক্ষ করলে দেখতে পাবেন যে রাস্তা ঘাটে বর্তমানে কোন শ্রেণি পেশার মানুষগুলো বেশি বের হচ্ছে, যারা বের হচ্ছেন তারা শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষ তারা বের না হলে তাদের ঘরের চুলায় ও আগুন ধরবে না আর পেটের ক্ষুধাও নিবারন হবে না। তাই আগে তাদের তালিকা করে ঘরে ঘরে ল খাবার পৌছে দিন।লকডাউন তো আর পেটের ক্ষুধা মেটাতে পারবে না। এখনো দেখা যায় পথে ঘাটে অনাহারে মানুষ পড়ে আছে। একে তো পেটে ক্ষুধা তার উপর রাস্তায় বের হলেই পিঠে লাঠির বাড়ি না হয় রিকশা, ভ্যানগাড়ির চাকার হাওয়া ছেড়ে দেয়া হচ্ছে, এ যেন মরার উপর খড়ার ঘা হয়ে তাদের উপর পড়ছে। এদিকে কতৃপক্ষ বলছেন পর্যাপ্ত খাবার মজুদ আছে কিন্তু এই মজুদকৃত খাদ্যসামগ্রী কি সঠিক ভাবে মানুষ পাচ্ছে কি না তাও দেখার একটি বিষয় আছে। যেহেতু সকল মানুষ বর্তমানে কর্মহীন অবস্থায় আছেন তারা বর্তমানে কি অবস্থায় আছেন তার খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য যদিও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন কিন্তু তা কতটা বাস্তবায়ন হচ্ছে সেটাও একটু তদারকি করা দরকার। দেশের মানুষ যাতে না খেয়ে থাকে সেজন্য সরকার থেকে নানান ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিন্তু তা সঠিকভাবে মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। গোটা দেশে লকডাউনের সিদ্ধান্ত সফল করতে হলে গরিব মানুষের হাতে টাকা তুলে দিতে হবে। তা না হলে মানুষ শুধু খাবারের খোঁজেই রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াবে!‌ শুধু রেশন বা বিনামূল্যে খাবার দিলেই হবে না। তাদের আরও কিছু চাহিদা থাকে। সেগুলোও যেন তারা পূরণ করতে পারেন, তার পরিসর তৈরি করে দিতে হবে। তাদের হাতে এমন কিছু তুলে দিতে হবে যেন তারা এই লকডাউনের সময়ে প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করেন। হড়িলুটের এই দেশে এই মহামারীর সময় ও দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন এলাকায় জনপ্রতিনিধিরা চুরি ছাড়তে পারছেন না। এছাড়াও তালিকায় নাম না থাকায়, ভোটার আইডি না থাকার কারনেও ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও অনেকে খাদ্য সামগ্রী পাচ্ছেন না। আবার অনেক জায়গায় এমন ও দেখা গেছে দলীয় লোকজন না হলে দেওয়া হচ্ছে না খাদ্য সামগ্রী। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই অসহায় মানুষগুলো কোথায় যাবে, কার কাছে যাবে খাদ্য সামগ্রীর জন্য? সরকারি, বেসরকারি অনুদানগুলো জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে না দিয়ে যদি প্রশাসনের মাধ্যমে দেওয়া হতো তা হলে ভালো হতো।

অন্তত গরীব অসহায় মানুষের খাদ্যসামগ্রী চুরি হতোনা। প্রশাসন যদি প্রতিটি পাড়ামহল্লায় একটি করে টিম তৈরি করে ঐ টিম সঠিকভাবে তালিকা তৈরি করে তা হলে প্রতিটি ঘরে ঘরে তারাই খাবার পৌঁছে দিতে পারতেন তা হলে আর কেউ না খেয়ে থাকতো না এবং সবাই সঠিক ভাবে খাদ্য সামগ্রী পেতো। এখনো অনেক সময় আছে চোরদের অপসারন করে প্রশাসনকে দায়িত্ব দিন। বর্তমানে প্রশাসনের লোকজন যেভাবে দিন রাত মাঠে কাজ করছেন দেশের মানুষকে বাঁচানোর জন্য সেই ভাবে খাদ্য সামগ্রীর দায়িত্ব ও তাদেরকে দিন। সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় ঠিকই তারা খাদ্য পৌঁছে দিতে সক্ষম হবেন।

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক

Development by: webnewsdesign.com