প্রেমিকের সঙ্গে ঝগড়া, ঘরে ঝুলছিল কলেজছাত্রীর নিথর দেহ

শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর ২০২২ | ৯:০৩ অপরাহ্ণ | 184

প্রেমিকের সঙ্গে ঝগড়া, ঘরে ঝুলছিল কলেজছাত্রীর নিথর দেহ

টুডে নিউজ ডেস্ক:: দিনমজুর বাবার স্বপ্ন ছিল একমাত্র মেয়ে মিম আক্তার রানী উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ভালো একটা চাকরিতে যোগ দেবে। আর মায়ের স্বপ্ন ছিল যদি চাকরি না পায় তাহলে অন্তত ভালো একটা ছেলের (পাত্র) হাতে তুলে দেবে তাকে। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে মেয়েকে মানুষ করার চেষ্টা চালিয়ে যান বাবা-মা। তবে তাদের স্বপ্ন পূরণের আগেই প্রেমের ফাঁদে পড়ে আত্মহত্যা করে রানী। মুহূর্তেই ভেঙে চুরমার হয়ে যায় বাবা-মায়ের স্বপ্ন।

বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে মোবাইল ফোনে প্রেমিকের সঙ্গে ঝগড়া করে রানী গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে বলে তার পরিবার দাবি করেন। তবে প্রেমিক ছেলেটির নাম ও ঠিকানা জানাতে পারেনি কেউ।

নিহত রানী ফরিদপুরের সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামের দিনমজুর আফছার মাতুব্বরের মেয়ে। তিনি সালথা সরকারি কলেজের উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।

রানীর বাবা আফছার মাতুব্বর বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে আমি ও আমার স্ত্রী বাড়ির পাশে একটি মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠানে যাই। মিলাদে যাওয়ার পর একটা ছেলে আমাকে ফোন করে বলে, আপনি তাড়াতাড়ি বাড়িতে যান। বাড়ি গিয়ে দেখেন আপনার মেয়ের কি অবস্থা। ‘

তিনি আরো বলেন, ‘আমি স্ত্রীকে নিয়ে দ্রুত বাড়িতে এসে দেখি আমার মেয়ে ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে। এরপর থেকে ওই ছেলের ফোন বন্ধ। তবে তার ছবি আছে আমার মেয়ের মোবাইলে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নেওয়ার সময় মেয়ের ফোনও নিয়ে গেছে। ‘

ঘটনার আগে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ওই ছেলের সঙ্গে আমার মেয়ের ঝগড়া হয় উল্লেখ করে আফছার মাতুব্বর বলেন, ‘পরে অভিমান করে আমার একমাত্র মেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আমি ওই ছেলের সন্ধান চাই। পাশাপাশি ওর বিচার চাই। আমি গরিব মানুষ। তারপরেও মেয়েটাকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। ওকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে চেয়েছিলাম। ‘

রানীর মা মোছা. নাজমা বেগম বলেন, ‘আমার ২ ছেলে ও ১ মেয়ে। ছেলেদের মধ্যে একজন বিয়ে করে আলাদা সংসার করছে। আরেক ছেলে ছোট। একমাত্র মেয়ে রানীকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল আমাদের। ওকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে ভালো একটা চাকরি দিতে না পারলেও ভালো একটা চাকরিজীবী ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। সেই স্বপ্ন আজ মাটির নিচে চলে গেল। ‘

রানীর চাচা উকিল মাতুব্বর বলেন, ‘রানীর সঙ্গে একটা ছেলে প্রেম সম্পর্ক ছিল। ধারণা করছি- ওই ছেলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে রাগারাগি করে আত্মহত্যা করেছে রানী। ‘

গট্টি ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লাবলু বলেন, ‘আমি স্থানীয়দের কাছ থেকে যতটুকু জানতে পেরেছি, তাতে সম্ভবত মেয়েটা তার প্রেমিকের সঙ্গে অভিমান করে আত্মহত্যা করেছে। ‘

সালথা থানার ওসি শেখ সাদিক বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রানীর বাবা-মা একটি মিলাদ মাহফিলে যান। বাড়িতে তাদের মেয়ে সালথা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী রানী একা ছিলেন। রানীর সঙ্গে একটা ছেলের সম্পর্ক রয়েছে। রাতে ওই ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে বলতে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয় বলে শুনেছি। পরে রানী ঘরের ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। ‘

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রানীর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক

Development by: webnewsdesign.com