লেখাপড়া করার ভীষণ ইচ্ছা ছিল মাসুমা খাতুনের। কিন্তু ইচ্ছা পূরণের আগেই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়েছিল তাঁকে। তবে দমে যাননি তিনি, বিয়ের ২২ বছর পর মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন মাসুমা। অদম্য এ নারী নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা সদরের আবদুল মজিদের স্ত্রী।
শুধু এইচএসসি নয়, দুই বছর আগে মেয়ের সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষাতেও উত্তীর্ণ হন মাসুমা। ১৯৯৭ সালে এসএসসি দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু পরীক্ষার আগেই অভিভাবকেরা তাঁর বিয়ে দিয়ে দেন। এরপর ২০১৭ সালে এসএসসি পাস করেন মাসুমা। এসএসসি পাস করার পর আরও পড়াশোনা করার ইচ্ছা জাগে তাঁর। পড়াশোনা করার তীব্র সে আকাঙ্ক্ষা থেকেই এইচএসসি পরীক্ষায় বসেছিলেন তিনি। মাসুমার কষ্ট বৃথা যায়নি, আজ বুধবার ঘোষিত ফলাফলে তিনি ও তাঁর মেয়ে দুজনেই উত্তীর্ণ হয়েছেন।
ফল ঘোষণার পর যোগাযোগ করা হলে মাসুমা খাতুন বলেন, বিয়ের সময় তিনি ধরেই নিয়েছিলেন আর কখনো পড়াশোনা করা হবে না তাঁর। কিন্তু মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসকে পড়াতে গিয়ে আবার পড়াশোনা করার ইচ্ছা জেগে ওঠে তাঁর। একপর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেন, ঘরের কাজের ফাঁকে ফাঁকে তিনিও মেয়ের সঙ্গে পড়বেন। নবম শ্রেণিতে মেয়ের সঙ্গে স্কুলে ভর্তি হন। মেয়ের সঙ্গে মিলে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে পাস করেন। এরপর মেয়েকে ভর্তি করান রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে, আর নিজে ভর্তি হন স্থানীয় একটি কলেজের সাচিবিক বিজ্ঞান বিভাগে। দুই বছর পরিশ্রমের পর মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস জিপিএ-৫ পেয়েছেন, আর মা মাসুমা জিপিএ-৪.১৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। মা-মেয়ের একসঙ্গে পাস করার খবর শুনে তাঁদের অভিনন্দন জানিয়েছেন কলেজের সহপাঠী, শিক্ষক এবং প্রতিবেশীরাও।
মাসুমা খাতুনের বাবার বাড়ি বাগাতিপাড়া উপজেলার বাড়ইপাড়া গ্রামে। স্বামী আবদুল মজিদ আনসার ব্যাটালিয়নে সিপাহি (প্রশিক্ষক) পদে চাকরি করেন। স্ত্রী-সন্তানের এমন কৃতিত্বে গর্বিত আবদুল মজিদও। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, তিনি যা পারেননি সেটি তাঁর স্ত্রী-সন্তানেরা করে দেখিয়েছেন। স্ত্রী-সন্তানকে লেখাপড়ায় আরও উৎসাহ দিয়ে যাবেন বলেও জানান তিনি।
সৌজন্যে : প্রথম আলো
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ||||
৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ |
১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ |
১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ |
২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ |
Development by: webnewsdesign.com