সিলেটের উত্তর পূর্ব সীমান্ত লাগোয়া কোম্পানিগঞ্জ উপজেলায় মেঘালয়ের কোলঘেঁষা পর্যটন কেন্দ্র সাদা পাথর। স্বচ্ছ শীতল জল আর সারি সারি পাথরে এ যেন এক অপরুপ সৌন্দর্যের আধার এই পর্যটন কেন্দ্রকে ঘিরে পর্যটকদের আগ্রহ সারা বছরই। এবারের ঈদেও এর ব্যতিক্রম নেই। সকাল থেকেই শহর থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে হাজার হাজার লোকজন ভিড় করে এই পর্যটন কেন্দ্রটিতে। সারাদেশের হাজারো পর্যটকের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে নয়নাভিরাম এই পর্যটন স্পট।
সিলেট নগরী থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরত্বে সীমান্তবর্তী উপজেলা কোম্পানীগঞ্জ। সিলেটে পাথরের স্বর্গরাজ্য হিসেবে খ্যাত ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারির জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন ‘সাদা পাথর’ নামক স্থানটি। এখানে বর্ষাস্নাত প্রকৃতি যেন সেজে ওঠে সবুজের আচ্ছাদনে। সম্প্রতি সিেেলট-ভোলাগঞ্জ রাস্তাটি মহাসড়কে উন্নীত হওয়ায় পর্যটকদের জন্য সহজ গন্তব্যে পরিণত হয়েছে এই স্পটটি।
ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা ঝরনার অশান্ত শীতল পানির অস্থির বেগে বয়ে চলা ধলাই নদীর উৎসমুখে স্বচ্ছ নীল জল আর পাহাড়ের সবুজ মিলেমিশে একাকার। নদীর বুকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা পাথরের বিছানা নদীটির শোভা বাড়িয়ে দিয়েছে হাজারগুণ। শহুরে যান্ত্রিকতা থেকে মুক্তি পেতে সারা বছরই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন পর্যটকরা। বুধবার সিলেটের এই পর্যটন স্পটটি হয়ে ওঠে পর্যটকদের পদভারে মুখরিত। সারাদেশ থেকে সৌন্দর্য পিপাসু ভ্রমণ প্রিয় পর্যটকরা জড়ো হয়েছিলেন এখানে। কেউ বা পরিবার পরিজন নিয়ে আর কেউবা বন্ধু বান্ধবের সাথে।
কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আগে থেকেই নৌকা ভাড়া নির্ধারণ করে রাখায় পর্যটকদের তেমন একটা ভোগান্তিতে পড়তে হয় নি। এছাড়া ট্যুরিস্ট পুলিশের উপস্থিতি ও সীমান্তরক্ষী বিজিবির তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মত। বেশিরভাগ নৌকাতেই পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য লাইফ জ্যাকেট রাখা হয়। এছাড়া এই পর্যটন কেন্দ্রে আসার ক্ষেত্রে আগে সবচেয়ে বড় অন্তরায় ছিল সিলেট কোম্পানিগঞ্জ রাস্তার বেহাল দশা। সম্প্রতি এই সড়কটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কে রুপ নেয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা আগের চেয়ে বহুগুণে উন্নত। সিলেট শহর থেকে মাত্র ৪০ মিনিটেই পৌঁছে যাওয়া যায় এখানে।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক আহমেদ কাওছার জানান, সপরিবারে বেড়াতে আসার জন্য সাদা পাথর জায়গাটি আমার প্রিয় পর্যটন স্পট। এর আগেও বহুবার এসেছি তবুও বার বার আসতে ইচ্ছে হয়। আগে রাস্তা খারাপ থাকলেও এবার উন্নত রাস্তার কারণেও জায়গাটির প্রতি ভালোবাসা আরো বেড়ে গেল। তিনি বলেন, নৌকা ভাড়াটা আরেকটু কম হলে আর কাছাকাছি থাকা খাওয়ার ভালো ব্যবস্থা থাকলে এই স্পটটি দেশের সেরা পর্যটন স্পটগুলোর মতই জনপ্রিয় হয়ে উঠতো।
Development by: webnewsdesign.com