বদলে গেছে পঞ্চাশ শয্যাবিশিষ্ট কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবার চিত্র। গত অক্টোবর মাসে ৬৬টি সন্তান প্রসব (নরমাল ডেলিভারী) করার সক্ষমতা অর্জন করেছে। নরমাল ডেলিভারীর মাধ্যমে সন্তান প্রসবের উদ্যোগ সফলতা লাভ করায় উপজেলায় নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। হাসপাতালের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ নূরুল হকের নেতৃত্বে হাসপাতালের চিকিৎসক ও সিনিয়র নার্স এবং মাঠকর্মীদের নিরলস পরিশ্রমে গত অক্টোবর মাসে ৬৬জনকে নরমাল ডেলিভারী করানো হয়। ধারাবাহিকতায় চলতি নভেম্বর মাসের ৬ তারিখে এ প্রতিবেদন লেখার আগ পর্যন্ত ৯টি নরমাল ডেলিভারী করানো হয়েছে। ফলে হাসপাতালে এসে নরমাল ডেলিভারী করানোর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই।
মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কর্মরত কয়েকজন চিকিৎসক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবার এই দৃশ্যপট বদলে দিয়েছেন। চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে শুরু করেছেন এ কার্যক্রম। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এখন অনেক ভালো মানের চিকিৎসার সেবা দিয়ে চলেছেন। হচ্ছে নিরাপদে নরমাল ডেলিভারী। এতে করে হাসপাতাল মুখী হচ্ছেন সন্তান প্রসূতি মায়েরা।
গতকাল উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের হারিছ মিয়ার স্ত্রীর নরমাল ডেলিভারীর মাধ্যমে একটি ছেলে সন্তান জন্ম দিয়েছেন। বর্তমানে স্ত্রী ও ছেলে এখন সুস্থ্য আছে। কোন সমস্যা অনুভব করছে না। প্রথমে ভয় পেলেও এখন খুশি হারিছ মিয়া ও তার স্ত্রী।
একটি সূত্রে জানা যায়, বেসরকারী হাসপাতাল আর ক্লিনিকের দালাল চক্রের কারণে নরমাল ডেলিভারী প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম। এসব ক্লিনিক এবং হাসপাতালে সেবার পরিবর্তে শুরু হয়েছে প্রসূতি সিজারের নামে এক ধরণের ব্যবসা। আবার গ্রামাঞ্চলে কিছু অদক্ষ, প্রশিক্ষনবিহিন ধাত্রী রয়েছে। যারা স্থানীয় ভাবে দাই মা বলে পরিচিত। এই দাই মার কারণে প্রসূতি মায়েদের মৃত্যু ঝুকি থাকে এবং মৃত্যু ঘটে। এমন অনেক ঘটনার নজির রয়েছে এলাকায়। এছাড়াও কুলাউড়া শহরের একটি ক্লিনিকে প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রোগীর স্বজনেরা ক্লিনিক ভাংচুরের ঘটনাও ঘটেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ নূরুল হক বলেন, একসময় কুলাউড়া হাসপাতালে প্রসূতিরা না আসায় নরমাল ডেলিভারী করানো প্রায়ই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে আমরা সবাই মিলে টিম ওয়ার্ক শুরু করি। হাসপাতালের নানা সমস্যা ও সংকট রয়েছে। সব কিছু কে উপেক্ষা করে সেরা সেবাই দিচ্ছি। কর্মরত সবাই আন্তরিক হয়ে কাজ করছে এর সফলতা পাচ্ছি। দিন দিন নরমাল ডেলিভারী ক্ষেত্রে প্রসূতিদের আগ্রহ বাড়ছে। কারণ হাসপাতালে নিরাপদে এ ডেলিভারী করানো হলে মৃত্যুর ঝুকি থাকে না। এভাবে নরমাল ডেলিভারী হলে মানুষের অর্থ সাশ্রয় হবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত ও নিরাপদ হবে।
Development by: webnewsdesign.com