নিজস্ব প্রতিবেদক, কুলাউড়া:: নির্বাচন কমিশন ঘোষনা দিয়েছে চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইবিএম পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচন করোনা পরিস্থিতির কারণে কোন অবস্থাতেই পেছানো হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে কমিশন। এদিকে এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কুলাউড়ায় সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রচারনা শুরু করেছেন। এ পর্যন্ত কুলাউড়া পৌর নির্বাচনে ৫ জন মেয়র প্রার্থী তাদের প্রার্থীতা জানান দিয়েছেন উঠান বৈঠক ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। তারমধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের রয়েছেন ২ জন প্রার্থী। তারা হলেন বিগত পৌরসভা নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্ছিত আওয়ামীলীগ নেতা, সাবেক ছাত্রনেতা অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ ও বিগত পৌর নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান মেয়র শফি আলম ইউনুছ। এই দুইজনের মধ্যে কে হচ্ছেন নৌকার কান্ডারী তা নিয়ে পৌর শহরসহ উপজেলাব্যাপী চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। এই দুইজনের একজন ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে আওয়ামী রাজনীতিতে পোড় খাওয়া। অপরজনের রাজনৈতিক কোন পটভূমি না থাকলেও একজন সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী।
অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ বিগত কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলেন। তিনি কুলাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। তারও পূর্বে তিনি শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের সভাপতি ছিলেন। দীর্ঘদিন শ্রমিক রাজনীতির সাথে জড়িত। কুলাউড়া উপজেলা শ্রমিকলীগের যুগ্ম আহবায়ক, জেলা শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। রাজনীতি ছাড়াও তিনি অসংখ্য সামাজিক ও ক্রীড়া সংগঠনের সাথে জড়িত। তিনি কুলাউড়া উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ স্কাউটস মৌলভীবাজার জেলা রোভার’র সহকারি কমিশনার। তিনি দীর্ঘদিন থেকে শিক্ষকতা পেশায় জড়িত। বর্তমানে কুলাউড়া উপজেলাধীন ভাটেরা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ। কুলাউড়া সরকারি কলেজের সাবেক সহকারি অধ্যাপক। তিনি পারিবারিকভাবে আওয়ামীলীগ। পিতা, ভাই-বোন সকলেই আওয়ামী ঘরানার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত।
অপরজন বর্তমান মেয়র শফি আলম ইউনুছ যিনি ইউনুছ মহালদার নামে অধ্যধিক পরিচিত। তিনি কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের বিগত কমিটির সদস্য ছিলেন। শফি আলম ইউনুছ বর্তমান মেয়র থাকার কারণে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও মনোনয়ন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিগত নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়া, বিগত জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে বিতর্কিত ভূমিকা, রাজনৈতিক পূর্বঅভিজ্ঞতা না থাকা, গত পৌর নির্বাচনের পর মূল ধারা থেকে বিচ্যুত হওয়া, শারিরীক অসুস্থতা ইত্যাদি নানা কারণে তার মনোনয়নপ্রাপ্তি বাধাগ্রস্থ হতে পারে বলে রাজনৈতিক বোদ্ধাদের ধারণা।
অপরদিকে অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ বিগত পৌর নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত মানায়, বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা থাকায়, পদবিহীন থেকেও দলের মূল ধারার রাজনীতিতে সক্রিয় থাকায়, সংগঠনের উপজেলা ও জেলা নেতৃবৃন্দের আশির্বাদপুষ্ট হওয়ায় তিনি মনোনয়নপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন বলে সর্বত্র জল্পনা-কল্পনা চলছে। দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে কতটুকু আশাবাদী এমন প্রশ্নের জবাবে বর্তমান মেয়র শফি আলম ইউনুছ বলেন, আমি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে পুরোপুরি আশাবাদী। আর যদি না পাই তাহলে পরবর্তী সময়ে দেখা যাবে, কি করা যায়। এত আগাম কিছু বলা সম্ভব নয়।
জানতে চাইলে অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ বলেন, ২০০৪ সালে উপজেলা ছাত্রলীগের সর্ববৃহৎ সম্মেলনের মাধ্যমে ছাত্রলীগ থেকে বিদায় নেওয়ার পর ১৬ বছর ধরে পদবিহীন রাজনীতি করে আসছি। করোনা পরিস্থিতিসহ সকল পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে আছি। আশাকরি দল আমাকে মূল্যায়ন করবে। এক্ষেত্রে দলীয় মনোনয়ন পেতে আমি শতভাগ আশাবাদী।
Development by: webnewsdesign.com