মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বন্যায় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। রবিবার গভীর রাত নতুন করে আবারও ধলাই নদীর ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এ নিয়ে ধলাই নদীতে ৪টি ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় এক হাজার পরিবার বন্যাক্রান্ত হয়ে পড়ছেন।
এছাড়াও ভারি বর্ষণে লাউয়াছড়া বনে পাহাড় ধসে গাছ পড়ে এক ঘন্টা বন্ধ ছিল সিলেটের সাথে সারাদেশের রেল যোগাযোগ।
সরেজমিন দেখা যায়, ঢলের পানিতে নিমজ্জিত থাকায় উপজেলার শমশেরনগর-কুলাউড়া ও শমশেরনগর-তারাপাশা সড়ক যোগাযোগে বিঘœ ঘটে। ফলে এ সড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চাকরিজীবিরা দুর্ভোগে পড়েন। উজানের ঢল ও অতিবৃষ্টিতে ধলাই নদী ছাড়াও লাঘাটা ও ক্ষিরনী নদীর পানি বেড়ে তিন দিনে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বন্যার্তরা। সরকারিভাবে এখনো অনেক এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছেনি।
এছাড়াও ভারী বৃষ্টিতে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতর রেলপথের উপর একটি গাছ পড়ে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল এক ঘণ্টা বন্ধ ছিল। পরে পড়ে থাকা গাছটি কেটে সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে আবার ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শ্রীমঙ্গল রেলওয়ের গণপ‚র্ত বিভাগের (পথ) ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী মনির হোসেন।
এছাড়াও জানা গেছে, উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের হকতিয়ারখোলা ও রহিমপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামে ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধে ২টি নতুন ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। উপজেলার নতুন-নতুন এলাক প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। ধলাই নদীর পানি বেড়ে প্রতিরক্ষা বাঁধে নতুন ও পুরাতন ভাঙ্গন দিয়ে পৌরসভা, রহিমপুর, আদমপুর, পতনঊষার, মুন্সীবাজার ও শমশেরনগর, সদর ইউনিয়নের ১১৫ টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।
অতিবৃষ্টির ফলে উজান থেকে আসা পাহাড়ী ঢলে ঘোড়ামারা, কেওয়ালীঘাট, রুপসপুর, রাধাগোবিন্দপুর, মহেশপুর, শ্রীরামপুর, দক্ষিণ ধুপাটিলা, পালিতকোনা, রসুলপুর, বনবিষ্ণুপুর, গোপীনগর, রশিদপুর, নোয়াগাঁও, চন্দ্রপুর, কোনাগাও, বনবিষ্ণুুপুর, রায়নগর, রামপুর, রামচন্দ্রপুর, হরিশ্মরন, জালালপুর, জগন্নাথপুর, প্রতাপী, কান্দিগাও, রামপাশা, কুমড়াকাপন, রামপুর, বিষ্ণুপুর. নারায়ণপুর, কান্দিগাঁও, গন্ডামাা, হকতিয়ারখোলা, কেওয়ালীঘাট, জালালপুর, বন্দরগাঁও, সতিঝিরগাঁও, মারাজানের পার, রাধানগর, হরিপুর প্রভৃতি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়ে ভাঙছে গ্রামীণ সড়ক।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, বন্যা দুর্গতদের জন্য ২০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। পৌর এলাকা ও রহিমপুরে বন্যাক্রান্তদের মাঝে শুকনো খাবার ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি সার্বক্ষনিক মনিটরিং করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১২ মেট্রিক টন চাল ও ২শ’ প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ করা হয়েছে। বন্যার খবর শুনে উপাধ্যক্ষ ড. মো: আব্দুস শহীদ এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. রফিকুর রহমান, মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মামুনুর রশীদসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন।
টানা বৃষ্টি হলে আরো কয়েকটি ঝুকিপুর্ণ স্থানে ভাঙ্গনের আশংকা করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ||||||
২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ |
৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ |
১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ |
২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ |
৩০ | ৩১ |
Development by: webnewsdesign.com