দুই বোনের একসঙ্গে চমক!

মঙ্গলবার, ০৭ জুলাই ২০২০ | ৩:২৭ অপরাহ্ণ | 599

দুই বোনের একসঙ্গে চমক!

ফাতেমা তুজ জোহরা (চাঁদনী) ও সাদিয়া আফরিন (তারিন)। সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় এই দুই বোনের বাড়ি। তাঁদের বাবা শামসুল ইসলাম চৌধুরী কানাইঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অবসরপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা। মা নুসরাত জাহান গৃহিণী।

দুই বোন বন্ধুর মতো। একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন, একই হলের একই কক্ষে থেকেছেন। কাজ করেছেন একই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে। লেখাপড়াও করেছেন মিলেঝিলে। এবার দুই বোন প্রশাসনে বিসিএস ক্যাডার হলেন একসঙ্গে।

চাঁদনী ও তারিন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছেন। ছোট বোন সাদিয়ার অনার্স সেশন ২০১১-১২। আর ফাতেমার ২০০৯-১০। সাদিয়া ২০০৯ সালে এসএসসি ও ২০১১ সালে এইচএসসি উভয় পরীক্ষায় পেয়েছেন জিপিএ–৫। ফাতেমা ২০০৭ সালে এসএসসিতে জিপিএ ৫ ও ২০০৯ সালে এইচএসসিতে ৪.৮ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।

তাঁরা একসঙ্গে এবার ৩৮তম বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে (বিসিএস) প্রশাসন ক্যাডারে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। অবশ্য ফাতেমা ৩৫তম বিসিএসে নন-ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়ে বর্তমানে কানাইঘাট সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। তাঁর স্বামী জাহাঙ্গীর আরিফ খান ৩৭তম বিসিএস থেকে বাগেরহাটে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে কর্মরত।

বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষে অন্য আট-দশজন শিক্ষার্থীর মতো হইহুল্লোড় করে কাটিয়েছেন সাদিয়া আফরিন। ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে (বিবিএ) তৃতীয় বর্ষের শেষের দিকে ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবতে শুরু করেন তিনি। প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি করার স্বপ্ন নিয়ে চলে নতুন উদ্যমে লেখাপড়া। এতে সঙ্গী তাঁর বড় বোন ফাতেমা। তাঁরও স্বপ্ন একই। স্বপ্ন বাস্তবায়নে একাডেমিক লেখাপড়ার পাশাপাশি চাকরির পড়াশোনা চালিয়ে যান তাঁরা।

দুই বোনের একই মত, তাঁদের অর্জনে বিশেষ কোনো কৌশল বা রহস্য নেই। সাদামাটাভাবে লেখাপড়া করেছেন। কখনো ঘড়ির কাটা মেপে পড়তে বসেননি। বরং মনের ইচ্ছানুযায়ী, আনন্দের সঙ্গে পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন। বাইরে কোনো গ্রুপ স্টাডিতেও অংশ নেওয়া হয়নি তাঁদের। তবে দুই বোন মিলে আলোচনা করে ও চাকরির অনেক জটিল প্রশ্নের সমাধান করেছেন তাঁরা।

শুধু পড়াশোনায় ব্যস্ততা নয়, আলোকিত মানুষ হওয়ার প্রত্যয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় দুই বোন ‘স্বপ্নোত্থান’ নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে কাজ করেছেন। সংগঠনটির পক্ষে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের লেখাপড়া শেখানো, কর্মজীবী শিক্ষার্থীদের নাইট স্কুলে পড়ানো, স্বেচ্ছায় রক্তদান ও এতিমদের সেবায় কাজ করেছেন তাঁরা। ইংরেজিতে অনার্স-মাস্টার্স করা ফাতেমা তুজ জোহরা জানান, শিক্ষাজীবনে স্বেচ্ছাশ্রমে সামাজিক ও সেবামূলক কাজ করেছেন। নতুন কর্মস্থলে সেসব কাজ আরও বেশি বেগবান করতে চান। তিনি বলেন, ‘ভালো মানুষ হয়ে দেশ ও মানুষের সেবা করে যেতে চাই।’

টানা চতুর্থবার বিসিএস দিয়ে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছালেন ফাতেমা। আর প্রথমবার বিসিএসে অংশ নিয়েই নিজের পছন্দের পদ ছিনিয়ে নিয়েছেন সাদিয়া। কোনো ধরনের কোচিং না করেই তাঁরা এই গৌরব অর্জন করেছেন। সাদিয়ার ভাষ্য, ‘বিসিএস অনেক ধৈর্যের পরীক্ষা। ধৈর্য ধরে লেগে থাকতে হয়।’

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক

Development by: webnewsdesign.com