রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাদশ সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আব্দুল হামিদ স্নাতকদের উদ্দেশে বলেন, দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ থেকে পড়াশোনা করে সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জনের পর সদা সত্য ও ন্যায়কে সমুন্নত রাখতে হবে। নৈতিকতা ও দৃঢ়তা দিয়ে দুর্নীতি ও অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের বিবেকবান নাগরিক হিসেবে জাতীয় আকাঙ্ক্ষা, অর্জিত ডিগ্রির মানমর্যাদা রক্ষা, ব্যক্তিগত সম্মান ও মূল্যবোধ এবং নৈতিকতাকে কখনোই ভূলুণ্ঠিত করবেন না। বিবেকের কাছে কখনও পরাজিত হবেন না।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিকালে রাবির একাদশ সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয় শেখ কামাল স্টেডিয়ামে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ এ সব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়ন ও অগ্রগতি নির্ভর করছে আপনাদেরই ওপর। চলতি দুনিয়ায় তারুণ্য, জ্ঞান, মেধা ও প্রজ্ঞা হবে দেশের উন্নয়নের প্রধান চালিকাশক্তি। আজকের দিনটি গ্র্যাজুয়েটদের কাছে যেমন স্মরণীয়, তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে একটি মাইলফলকও বটে। নবীন গ্র্যাজুয়েটগণ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতিকে ধারণ করে নবোদ্যমে নতুন পথে ধাবিত হবেন। উন্নত বাংলাদেশ গঠনে নিজেকে নিয়োজিত করবেন। জাতির মূল প্রত্যাশাও এটাই।
চ্যান্সেলর আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মূলত জ্ঞানচর্চা, মুক্তচিন্তা ও মানবিক মূল্যবোধ বিকাশের বড় ক্ষেত্র। এখানে নিরন্তর গবেষণার মধ্যে দিয়ে একদিকে যেমন সৃষ্টি হয় নবতর জ্ঞানের, তেমনি বহুমুখী সৃষ্টিশীল কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মননে জাগ্রত হয় মানবিক মূল্যবোধ। শিক্ষার সঙ্গে মানবিক মূল্যবোধ পৃথিবীকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মূল প্রেরণা হিসেবে কাজ করে।
কিন্তু সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কিছু কিছু ঘটনা এই মানবিক মূল্যবোধের বিকাশকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। এ ব্যাপারে বিশেষভাবে সচেতন থাকা শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান।
শিক্ষকদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, আদর্শ ছাড়া, প্রচেষ্টা ছাড়া, বৃত্তি ছাড়া, পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস ছাড়া শিক্ষা মূল্যহীন। তাই একজন শিক্ষককে হতে হবে আদর্শ ও ন্যায়-নীতির প্রতীক।
সমাবর্তন বক্তা পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. রঞ্জন চক্রবর্তী নতুন গ্র্যাজুয়েটদের বলেন, নিজস্ব বিশ্লেষণাত্মক, যুক্তিনিষ্ঠ মানসিকতা গঠন, জাতীয় ও আঞ্চলিক আনুগত্য প্রদর্শন করে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যাগুলোকে সমাধানের আকাঙ্ক্ষা থাকতে হবে।
সমাবর্তনের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রশাসনের কাছে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা প্রত্যাশা করি। পদ-পদবীর প্রত্যাশা শিক্ষকরা কেউ দলাদলিতে জড়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত করবে সেটাও আমরা গ্রহণ করব না।
উল্লেখ্য, একাদশ সমাবর্তনে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েট ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি অর্জনকারী ৩ হাজার ৪৩২ জন শিক্ষার্থীকে সনদ প্রদান করা হয়।
Development by: webnewsdesign.com