জগন্নাথপুরে ডাক্তারের অবহেলায় শিশুর মৃত্যু: শিশুর মৃত্যৃ হয়েছে রাতে লেখা হয়েছে দিনে!

বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২০ | ১০:২৮ অপরাহ্ণ | 507

জগন্নাথপুরে ডাক্তারের অবহেলায় শিশুর মৃত্যু: শিশুর মৃত্যৃ হয়েছে রাতে লেখা হয়েছে দিনে!

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে তিন মাস বয়সী আমান রহমান নামে শিশু সোমবার বিকালে হাসপাতালে ভর্তির হওয়ার পর সোমবার রাতে মারা যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লোক্স এর কর্তরত ডাক্তারের অবহেলায় আমান নামে শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বরাবরে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে ও সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর বহিঃ বিভাগে শিশু আমানকে নিয়ে আসলে ডাক্তার মো. নাজমুস সাদাত বাচ্ছাটিকে দেখেন। তাহার পরামর্শ অনুযায়ী হালকা শ^াস কষ্টের জন্য গ্যাস মেরে বাড়ীতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। পরে অন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ইমারজেন্সিতে গ্যাস নেওয়ার জন্য নিলে কর্তব্যরত ডাক্তার ভর্তির করার কথা বলেন।

ডাক্তাররা ভর্তি করে ছেলেকে গ্যাস মেরে দেয়। এ সময় ঔষধ সহ কেনলা নিয়ে আসার জন্য প্রেসক্রিপশন দেন। এসব নিয়ে আসলে কেনলা দিয়ে বাচ্চার হাতে পায়ে ৬টা ছিদ্র করা হয়, কোন রগ না পেয়ে রক্তপাত হওয়ার পর নার্স ও ওয়ার্ডবয় টিংকু আর্চাজ্য জোর পূর্বক ছেলের বাবা জিয়াউর রহমানকে বাহির করে দেয় ও তার সাথে খারাপ ব্যবহার করেন, ছেলে বাবা চলে যাওয়ার সময় দেখতে পান শিশুটিকে মাংস দিয়ে ইনজেকশন পুশ করা হচ্ছে। রাত ১২টার দিকে বাচ্চার অস্থিরতা দেখা দিলে কর্তব্যরত কোন ডাক্তার ও নার্স এর খোঁজ নিয়ে পাওয়া যায় নাই বলে অভিযোগে উল্ল্যেখ করা হয়। অনেক সময় পার হওয়ার পরও বাচ্চাকে অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে নাই ও কোন ডাক্তার দেখেন নাই।

বাচ্চার মা বাচ্চার অস্থিরতা দেখে কান্নাকাটি শুরু করলে আশে পাশে কোন নার্স পাওয়া যায় নাই। হাসপাতালে থাকা বেডের লোকজন ৩য় তলায় গিয়ে দেখতে পান, নার্স দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে আছে ঘুম থেকে ডেকে আনার পর নার্স ডাক্তারকে খোঁজতে থাকেন অনেক্ষণ খোঁজার পর ডাক্তার এসে বাচ্চাকে দেখে মৃত ঘোষনা করেন। মজার বিষয় হল মৃত শিশুর সাটিফিকেটএ দিনের ১টায় ভর্তি দেখিয়ে আবার বিকাল ২টা ৩০ মিনিটে মৃত দেখানো হয়।
হাসপাতালে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ব্যক্তি জানান, এই হাসপাতালে কোন শিশু বিশেষজ্ঞ নাই। শিশুরা আসলে সঠিকভাবে দেখা শুনা করা হয় না। অনেকেই ভর্তি হওয়ার পর আর চিকিৎসা দেওয়া হয় নাই। মধ্যরাতে শিশুদের শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে কর্তব্যরত নার্স ডাক্তারকে ডাকা হলে তারা আসেন না। এ সময় তারা বলেন বেশি কিছু করা যাবে না।

এ ব্যাপারে শিশুর বাবা উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের বাগময়না গ্রামের জিয়াউর রহমান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আমাদের পরিকল্পনামন্ত্রীর আন্তরিক চেষ্টায় স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক সাফল্যে এসেছে। এ অংশ থেকে আমাদের উপজেলার ডাক্তাররা আমাদের বঞ্চিত করেছেন। আমাদের উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লোক্স যেন টাকা রুজির অফিস। এখানে জনগনকে ভাল সেবা দেওয়া হয় না।

আমার শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হল সকাল ১১ টায় সারা দিন রাত পর্যন্ত সেবা না দিয়ে পুরাতন প্রেসক্রিপশন দিয়ে ঔধষ চালিয়ে যেতে বলেন ডাক্তার মো. নাজমুস সাদাত। এখানে নার্সরা যেন এমবিবিএস ডাক্তার হয়ে গেছেন। তাদের কথাবার্তা ভাল নয়।

আমাকে নার্স টিংকু আর্চাজ কয়েকবার গালাগালি করে। আমার ছেলে ডাক্তারের অবহেলায় রাতে মৃত্যু হলেও মৃত্যু সাটিফিকেটে দিনে দেখানো হয়। আমার ছেলের মৃত্যুতে শোকাহত পুরো পরিবার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে শিশু হত্যার বিচার চাই।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লোক্স এর ডাক্তার মো. নাজমুস সাদাত ও সিনিয়র নার্স টিংকু আর্চাজ্য জিয়াউর রহমানের অভিযোগটি সঠিক না বলে জানান। তারা ডাক্তারের অবহেলার কথাও অস্বীকার করেছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লোক্স এর ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও মেডিকেল ও শিশু রোগে অভিজ্ঞ ডা: মো. সায়খুল ইসলাম বলেন, ডাক্তারের অবহেলায় শিশুর মৃত্যর বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তদন্ত করে বিষয়টি দেখবো।

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক

Development by: webnewsdesign.com