শিশুদের জ্বর জনিত খিঁচুনি বা ফিব্রাইল কনভালশন

শুক্রবার, ১৬ আগস্ট ২০১৯ | ১০:৪৬ অপরাহ্ণ | 1013

শিশুদের জ্বর জনিত খিঁচুনি বা ফিব্রাইল কনভালশন

ফিব্রাইল কনভালশন যা বাংলায় বলা যায় জ্বর জনিত খিঁচুনি রোগ’। রোগটা অনেকটাই এমন যে, রোগীর মস্তিস্কে কোন ক্ষতজনিত কারণ ছাড়াই শরীরে খিঁচুনি হয়। আর এ খিঁচুনি সাধারণত জ্বর এর সাথেই হয়ে থাকে। এ রোগটি বাচ্চাদেরই হয়, বাচ্চার বয়স ৬ থেকে ৬০ মাস পর্যন্ত যে কোনো সময় হয়ে পারে। ছেলে বাচ্চারা মেয়ে বাচ্চাদের থেকে বেশি এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তাই পাঁচ বছরের নিচে মানে ৬০ মাস বয়সের নিচে যে কোনো ছেলে বাচ্চার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকতে হবে পরিবারের সকল সদস্যদের।

একজন সুস্থ্য সবল স্বাভাবিক ছেলে বাচ্চার ভাইরাল ইনফেকশন, নিউমোনিয়া, অটাইটিস মিডিয়া (মধ্য কর্ণ এর প্রদাহ), টনসিলাইটিস, রেচন তন্ত্রের (কিডনি – ইউরেটার – ব্লাডার – ইউরেথ্রার) কোন ধরণের ইনফেকশন থেকে হতে পারে।

কিভাবে বুঝবো ফিব্রাইল কনভালশন বা জ্বর জনিত খিঁচুনি রোগ?

ডা. মুফতি মুহাম্মদ শামস

বাচ্চার বয়স ৬ মাস থেকে ৬০ মাসের মধ্যে, তবে ১৪ থেকে ১৮ মাসের মধ্যে বেশি হয়। জ্বর ১০১ ফারেনহাইড (ডিগ্রি) বা তার বেশি থাকে। খিঁচুনি হবে ২৪ ঘণ্টায় একবার। খিঁচুনির স্থায়িত্বকাল হবে কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিট পর্যন্ত। কিন্তু ১৫ মিনিটের বেশি হবে না। সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় একবারই খিঁচুনি হয়, ২ বার হওয়াটা খুব বিরল। মেনিনজাইটিস এর কোনো লক্ষণ থাকবে না। মেনিনজাইটিস এর লক্ষণ সাধারণত মাথার চুলের নরম অংশটা ফুলে থাকবে (বালজিং ফ্রন্টানালী), ঘাড় শক্ত হয়ে যাবে (নেক স্টিফনেস), আবোল-তাবোল বকাবকি করবে (স্টোপর) খিটখিটে মেজাজ থাকবে। এ খিঁচুনির সাথে নিউরোলজিকেল কোনো অসুবিধা থাকবে না।

কি পরীক্ষা করা লাগবে?

  1. CBC, Blood for C/S,
  2. Throat swab for C/S,
  3. Urine R/M/E & C/S
  4. CXR – PA View
  5. Lumber puncture for CSF Study,
  6. Others-
  7. Blood sugar, Serum electrolyte, Serum calcium, ECG, Neuro imaging.

সিম্পল ফিব্রাইল সিজার এর ক্ষেত্রে EEG এবং Neuro imaging না করলেও চলবে।

চিকিৎসা :

  • একুইট ইপিছডের বেলায়, রোগীর অভিভাবককে বুঝিয়ে বলতে হবে এবং সাহস দিতে হবে।
  • রোগীর এবিসি মানে এয়ারউয়ে, শ্বাস প্রশ্বাস ও রক্তসঞ্চালন প্রক্রিয়ার রক্ষণাবেক্ষণ করা।
  • জ্বরের জন্য গা মুছিয়ে দেবেন। ফ্যান ছেড়ে রাখতে হবে। প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করবে। শরীরের অতিরিক্ত কাপড় খোলে দিতে হবে।
  • ঠান্ডা বরফ পানি ব্যাবহার করা যাবে না।
  • খিঁচুনি নিয়ন্ত্রণের জন্য- ডায়াজেপাম, বাচ্চার প্রতি কেজি ওজনের জন্য ০.৫ মিলিগ্রাম হিসেব করে পায়খানার রাস্তায় বা প্রতি কেজি ওজনের
  • জন্য ০.২ থেকে ০.৩ মিলিগ্রাম হিসেব অনুযায়ী শিরাপথে দিতে হবে।
  • এন্টিবায়োটিক সিরাপ বা ইঞ্জেকশন।

কিভাবে প্রতিরোধ করা যাবে বারবার আক্রান্ত হওয়া থেকে?

জ্বর আসার সাথে সাথে প্যারাসিটামলের সাথে ডায়াজেপাম উপরের হিসেব অনুযায়ী প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা পরপর ৩ দিন। সাধারণত সঠিক সময় চিকিৎসা নিলে রোগী ভালো হয়ে যায়। আর কিছু কিছু রোগীর ক্ষেত্রে ৬০ মাসের পর ইপিলেপ্সি রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ বাঞ্ছনীয়।

 

  • ডা. মুফতি মোহাম্মদ শামছ। রেজিস্ট্রার ওটোল্যারিঙ্গোলজি ও হেড নেক সার্জারি, পার্কভিউ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক

Development by: webnewsdesign.com