টুডে নিউজ ডেস্ক::
শিক্ষা বা শেখার কোনো বয়স নেই এই কথাটির আবারও প্রমাণ করলেন শেরপুরের আবুল কালাম আজাদ।৬৭ বছর বয়সে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন তিনি।এ বছর তিনি উন্মুক্ত বিশ্ববিদালয়ের অধীনে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়াকাজীরচর ইউনিয়নের লঙ্গরপাড়া গ্রামের গ্রামের আব্দুর রশিদ মন্ডলের ছেলে এই বৃদ্ধের তিন ছেলে উচ্চ শিক্ষিত।
এসএসসি পরীক্ষা দিতে বাবাকে তার ছেলেরা সহযোগিতা করছেন।প্রতিবেশীরা উচ্ছ্বসিত।তার পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক সারা ফেলেছে।চলছে আলোচনা।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে।
বৃদ্ধ বয়সে এসে তিনি প্রমাণ করেছেন শিক্ষার কোনো বয়স নেই।এসএসসি পাশ না করেও তিনি লিখেছেন বহু ছড়া,কবিতা,উপন্যাস,গল্প ও গান।ইতোমধ্যে তার দেহদাহ ও দেশরত্ন নামে দুইটি কবিতার বই প্রকাশ হয়েছে।
আবুল কালাম আজাদ বলেন,তিনি ১৯৭৫ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। পারিবারিক সমস্যার কারণে পরীক্ষা না দিয়ে চাকরি নিয়ে সৌদি আরব যান।সেখানে অবস্থান করেন প্রায় ১৮ বছর।বাড়ি এসে সাংসারিক কাজের ফাঁকে শুরু করেন লেখালেখি।
তার তিন ছেলে।অভাবের কারণে পড়ালেখা করতে না পারলেও তিন ছেলেকে উচ্চ শিক্ষিত করেছেন।তার বড় ছেলে কলেজ শিক্ষক।মেজ ছেলে কামিল পাশ ও ছোট ছেলে প্রকৌশলী।পুত্রবধূরাও শিক্ষিত।
তিনি জানান,দীর্ঘদিন ধরে স্বপ্ন দেখতেন শিক্ষিত হবেন।এ কারণে ছেলেদের সহযোগিতায় শুরু করেন পড়ালেখা।এবার তিনি বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
আবুল কালাম আজাদের মেজ ছেলে আরিফুল ইসলাম বলেন,বাবা সংসার জীবনে অনেক কষ্ট করেছেন।এ কারণে ইচ্ছা থাকা সত্বেও পড়ালেখা করতে পারেননি।শেষ বয়সে তার চাওয়া পূরণ করতে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করছি।
প্রতিবেশী ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মুজিবুর রহমান বলেন,কিশোর বয়সেই অনেকে পড়ালেখা করতে চায় না।আজাদ সাহেব বৃদ্ধ বয়সে লেখাপড়া করে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ায় এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছেন।তার এমন আগ্রহের বিষয়টি তরুণদের লেখাপড়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করবে বলে মনে করি।
খড়িয়াকাজীরচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দুলাল মিয়া বলেন,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দেশের উন্নয়ন নিয়ে লেখা কবিতার বই প্রকাশ করে এলাকায় প্রশংসিত হয়েছেন আবুল কালাম আজাদ।গ্রামে তিনি কবি কালাম নামে অধিক পরিচিত।
আবুল কালাম আজাদ এই বয়সে এসে ধৈর্যের সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন এ কারণে আমরা খুশি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রহুল আলম তালুকদার বলেন,আবুল কালাম আজাদ দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার কোনো বয়স নেই।তবে এ ঘটনা অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
Development by: webnewsdesign.com