সিলেট মহানগরের বন্দরবাজার এলাকার লালবাজারের ‘আজাদ বোর্ডিং’। আবাসিক হোটেলটি প্রায় সময়ই উঠে আসে খবরের শিরোনামে। নারীদের দিয়ে অসামাজিক কাজ করানোর দায়ে ২০১৯ সালে এটি সিলগালাও করা হয়। তবু থামেনি এ আবাসিক হোটেলে অনৈতিক কাজ।
সর্বশেষ আজাদ বোর্ডিংয়ের একটি কক্ষে মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে পাওয়া গেছে এক বৃদ্ধের বিবস্ত্র লাশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আজাদ বোর্ডিংয়ের নিচ তলার ২নং কক্ষের দরজা ভেঙে মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে আব্দুর রউফ (৭০) নামে এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
আব্দুর রউফ সিলেট জেলার ওসমানীনগর উপজেলার কুরুয়া গ্রামের মনু মিয়ার ছেলে।
লাশ উদ্ধারকালে আব্দুর রউফকে বিবস্ত্র অবস্থায় পায় পুলিশ। লাশের পাশে পড়েছিলো কিছু ওষুধ ও একটি ব্যাগে রাখা ছিলো অনেকগুলো তাবিজ।
হোটেল কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে- সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে আব্দুর রউফ আজাদ বোর্ডিংয়ের নিচ তলার ২নং কক্ষটি ভাড়া নেন। তবে বুকিংয়ের সময় তার জাতীয় পরিচয়পত্র চায়নি হোটেল। মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত কক্ষটির দরজা বন্ধ দেখে হোটেল কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দিলে কোতোয়ালি থানার একদল পুলিশ বিকাল ৩টার দিকে এসে দরজা ভেঙে রউফের বিবস্ত্র মরদেহ দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে।
পরে লাশটি ময়না তদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে পুলিশ।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন- লাশের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। প্রাথমিকভাবে হত্যা বলে মনে হচ্ছে না। কীভাবে মৃত্যু হয়েছে আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি। আর ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে নিশ্চিত হয়ে এ বিষয়ে বলা যাবে। তিনি বলেন- লাশের পাশে পাওয়া ওষুধগুলো চিকিৎসককে না দেখালে বুঝা যাবে না এগুলো কীসের ওষুধ।
এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন- নিয়ম হচ্ছে কোনো বোর্ডার হোটেলে উঠলে তার যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণে রাখবে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়াই আব্দুর রউফকে রুম ভাড়া দিয়েছে ‘আজাদ বোর্ডিং’। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগে ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর এই ‘আজাদ বোর্ডিং’-এ অভিযান চালিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপের দায়ে ৫ নারী ও ৭ জন পুরুষকে আটক করা হয়। সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে পরিচালিত হয়েছিলো সেই অভিযান। ওই দিনই এই আবাসিক হোটেল সিলগালা করা হয়। পরে সেটির মালিকানা বদল হয়ে যায়। কিন্তু এরপরও হোটেলটিতে অব্যাহত থাকে অসামাজিক কার্যকলাপ।
একটি সূত্র জানায়, মঙ্গলবার বিকালে লাশ উদ্ধারের সময় পুলিশ পুরো ‘আজাদ বোর্ডিং’-এ তল্লাশি চালায়। এসময় সন্দেহজনক এক নারীর অবস্থান ছিলো হোটেলটিতে। পরে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে তিনি পালিয়ে যান।
তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি নন ‘আজাদ বোর্ডিং’ কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার বিকালে হোটেলে গিয়ে মালিকপক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। ডেস্কে এক যুবক বসা থাকলেও তিনি নিজের নাম-পরিচয় দিতে রাজি হননি। তিনি এসব বিষয় কিছু জানেন না বলে জানান।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ (পিপিএম) বলেন- অনৈতিক কার্যকলাপ রোধে সিলেটের আবাসিক হোটেলগুলোতে পুলিশ প্রায়ই অভিযান দেয়। ‘আজাদ বোর্ডিং’-এর বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানি না। শুধু আজ (মঙ্গলবার) একটি লাশ উদ্ধার হয়েছে খবর পেয়েছি। তবে এ হোটেলের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | |
৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ |
১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ |
২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ |
২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |
Development by: webnewsdesign.com