বাঙালী জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ কাব্য হলো ৭ই মার্চের ভাষণ

শুক্রবার, ০৬ মার্চ ২০২০ | ১০:১৯ অপরাহ্ণ | 965

বাঙালী জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ কাব্য হলো ৭ই মার্চের ভাষণ
যে মহাকবি এমন একটা কাব্য রচনা করেছেন, যা মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে , তার নাম শেখ মুজিব,আর তার কাব্যের নাম বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ হিসেবে চিন্থিত।
কি ছিল সেই ভাষণের প্রক্ষাপট, কি তার তাৎপর্য আসুন আপনাতে আমাতে মিলে একসঙ্গে একটু পর্যালোচনা করি।
১৯৭১ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ বাঙালীর জাতীয় সত্তা পাকিস্তানের ধর্ম ভিত্তিক রাষ্ট্র কাঠামো থেকে ছিটকে বেরিয়ে আসার জন্য যে প্রচন্ড আবাগে উম্মথিত হচ্ছি, পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠি গোড়া থেকেই তার প্রতিবিধান কিভাবে করতে হবে তা ঠিক করে রেখেছিল।
‘৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে আইউব সরকারের পতনের পর ‘৭০ এর সাধারন নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে।
সি.এম.এল.এ ইয়াহিয়া বহুবার সময় পরিবর্তনের পর মার্চ ২৫ এ সাধারন পরিষদের অধিবেশনের ঘোষণা দেয়।
কিন্তু পূর্ব পরিকল্পনা মত ১লা মার্চ তা স্থগিত করে,ফেটে পরে সমগ্র বাঙলা,জাতির দিগনির্দেশনায় মুজিব ৩ মার্চ আসহযোগ-হরতাল ঘোষনা করলেন।
৬ই মার্চ রাতে সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং তাজউদ্দিন আহমেদসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ কয়েকজন নেতার সাথে আলোচনা করেছিলেন।
“সামরিক শাসন তুলে নেয়া এবং সৈন্যদের ব্যারাকে ফেরত নেয়াসহ পশ্চিম পাকিস্তানের প্রতি চারটি শর্তের ব্যাপারেই শুধু বঙ্গবন্ধু তাঁর সহকর্মীদের সাথে আলোচনা করেছিলেন।”
“ভাষণ দিতে বাসা থেকে বেরোনোর সময় শেখ মুজিবকে তাঁর স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব বলেছিলেন – তুমি যা বিশ্বাস করো, তাই বলবে। ৭ই মার্চের সেই ভাষণ তিনি নিজের চিন্তা থেকেই দিয়েছিলেন। ভাষণটি লিখিত ছিলো না।”
৭ই মার্চ সকাল থেকেই ঢাকায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে ছিল আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা এবং ছাত্র নেতাদের ভিড়।
দুপুর দু‌’টার দিকে আব্দুর রাজ্জাক এবং তোফায়েল আহমেদসহ তরুণ নেতাকমীদের সাথে নিয়ে শেখ মুজিব তাঁর বাড়ি থেকে রওনা হয়েছিলেন জনসভার উদ্দেশ্যে।
এদিকে সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকা পরিণত হয়েছিল মিছিলের নগরীতে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সে সময় রেসকোর্স ময়দান নামে পরিচিত ছিল।
সেই রেসকোর্স ময়দানে লাখ লাখ মানুষের অপেক্ষার পালা শেষ করে সাদা পায়জামা পাঞ্জাবী এবং হাতাকাটা কালো কোট পড়ে শেখ মুজিব উপস্থিত হয়েছিলেন।
আগের নির্ধারিত রাস্তা বাদ দিয়ে ভিন্নপথে তাঁকে সেখানে নেয়া হয়েছিল।
মঞ্চে সকাল থেকেই গণসঙ্গীত চলছিল। সেদিন শেখ মুজিব সেই মঞ্চে একাই ভাষণ দিয়েছিলেন।
৭ই মার্চে সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা আসতে পারে। মানুষের মধ্যে এ ধরণের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল।
এই একটি ভাষণের মাধ্যমে তিনি একটি জাতিকে সশস্ত্র বাঙ্গালী জাতিতে রূপান্তর করেছিলেন। স্বাধীনতার বীজ তিনি বপন করেছিলেন,”
আর ৭ মার্চ রেসকোর্সে তার স্বরচিত অনবদ্য কাব্য পাঠ করলেন।
সেই ভাষণ ছিল বাঙলার স্বাধীনতার মেনিফেস্টো।
নির্বাচিত গণপ্রতিনিধি যখন বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাইনা। দেশের মানুষের অধিকার চাই।’
তখন তিনিই হয়ে উঠেন দেশের অঘোষিত প্রধানমন্ত্রী।
তার এক কথায় বন্ধ হয়ে গেল সারা দেশ।
বিবেচক কবি বললেন ‘গরীবের যাতে কষ্ট না হয়’ তেমন সবকিছু এ-হরতালের আওতা মুক্ত।
দ্রষ্টা কবি প্রস্তুতি নিতে বললেন, যার যাকিছু আছে তাই নিয়ে, তবে হিংসা নয়, আত্মরক্ষা, ঘরে ঘরে দুর্গ তৈরি করে।
এই ক্রান্তি কালে দিলেন জাতির সকল শ্রেণির প্রতি দিকনির্দেশনা, সামরিক বেসামরিক সবার প্রতি। প্রবীণ জ্ঞানির মত বললেন ‘এ-দেশের মানুষকে খতম করার চেষ্টা চলছে-বাঙালীরা বুঝে সুঝে কাজ কর’।
আর তারপর সেই অমোঘ ঘোষনা,যেন জিব্রায়েলের কন্ঠ থেকে নিসৃত সুসমাচার,
‘রক্ত যখন দিয়েছি,রক্ত আরও দেব।এ দেশের মানুষ কে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ।
এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
জয় বাংলা।’
                          ৭ই মার্চ সেই দিবালোকের সূর্য, রাতের জ্যোৎনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
মোঃ মাহমুদুল হাসান সবুজ
আহ্বায়ক
আনন্দ মোহন কলেজ শাখা ছাত্রলীগ।

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক

Development by: webnewsdesign.com