শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নুরপুর ইউনিয়নের সুতাং বাজারের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সুতাং ব্রিজটি বেশ কয়েক বছর ধরেই অবহেলিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ইতোমধ্যে সুতাং নদীর ব্রিজের টেন্ডার হয়ে গেলেও নানা ওজুহাতে শুরু হচ্ছে না এর নির্মাণ কাজ। এ নিয়ে বিড়ম্বনার শেষ নেই।
জানা গেছে- ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এই ব্রিজটি দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই হাজারো মানুষসহ অসংখ্য যান চলাচল করে আসছে। ব্রিজটি দিয়ে প্রতিদিন চলে লেগুনা, মাইক্রো, সিএনজি, টমটমসহ হাল্কা-ভারি শতশত যানবাহন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মেয়াদোত্তীর্ণ এই ব্রিজটিতে কোন গাড়ি ক্রস করলেই ব্রিজ কেঁপে উঠে। প্রতিবছরই ব্রিজের পূর্ব অংশ দেবে গিয়ে নদীতে মিশে যাচ্ছে। কোনরকমভাবে বালুর বস্তা দিয়ে ভরাট করে টিকিয়ে রাখা হচ্ছে নদীর পাড়। এছাড়া ব্রিজের রেলিংগুলোও ভেঙে গেছে। মাঝখানে সৃষ্টি হয়েছে গর্ত। যেকোন সময় ব্রিজ ভেঙে নদীতে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
প্রতিদিন আশপাশের প্রায় ১৫-২০টি গ্রামের হাজারো লোকজন স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীসহ শত শত যানবাহন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। গত ২-৩ বছর ধরে ব্রিজ দিয়ে কেবলমাত্র চলাচল করছে হালকা যানবাহন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়- কিছুদিন আগে পুরাতন ব্রিজটি ভেঙ্গে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করার জন্য টেন্ডার আহবান করে উপজেলা প্রকৌশল অফিস। ঠিকাদার পুরাতন ব্রিজটি ভাঙার জন্য ওই ব্রিজের পাশেই বিকল্প সড়ক ও সেতু করে দিয়েছিলেন। কিন্তু গত (২৯ এপ্রিল) প্রবল বৃষ্টিতে বিকল্প সড়ক ও সেতুটি নদীতে তলিয়ে গেছে। এখনো এটি মেরামত করা হয়নি।
সুতাং বাজারের ব্যবসায়ী এম এ মামুন আহমেদ জানান, ‘আমরা প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্রিজটি দিয়ে চলাচল করি। যখন ব্রিজের উপর গাড়ি ওঠে, তখন অনেক সময় সেটি কেঁপে ওঠে। যাত্রীরা অনেক সময় ভয়ে গাড়িতে উঠতে চায় না।’
একই গ্রামের সমাজকর্মী গোলাম সারোয়ার উদ্দিন বাবলু জানান, করোনা ভাইরাসের সংক্রামণের আগে দেখলাম ব্রিজটিকে কিছু লোক কাজ করছিল। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নতুন করে নির্মিত করা হবে ব্রিজটি। কিন্তু বর্তমানে কাজ স্তবির হয়ে আছে। এই বাজারের হাজার হাজার মানুষের আসা-যাওয়ার জন্য তিনি বিকল্প রাস্তা নির্মাণ করে ব্রিজটি অতিসত্বর পুনর্নির্মাণ করার জন্য জোর দাবি জানান।
নুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মুখলিছ মিয়ার সাথে কথা বললে তিনি জানান, বিষয়টি এলজিইডির অধীনে রয়েছে। তিনি মজবুত করে ব্রিজটি দ্রুত নির্মাণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জ এলজিইডির উপ সহকারী প্রকৌশলী দিলীপ কুমার দাশ জানান, সুতাং নদীর ব্রিজের টেন্ডার ইতোমধ্যে হয়ে গেছে। করোনা ও বর্ষার কারণে ঠিকাদার কাজ শুরু করতে পারেনি। খুব শীঘ্রই এই ব্রিজের কাজ শুরু করা হবে। এছাড়া মানুষকে সচেতন করার জন্য ব্রিজের কাছে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়া হবে বলে তিনি জানান।
সৌজন্যে: সিলেট ভয়েস
Development by: webnewsdesign.com