নিজস্ব প্রতিবেদক, কুলাউড়া∷ কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নে পানজুমসহ ভূমির মালাকানা নিয়ে খাসিয়া ও স্থানীয় বাসিন্দা রফিক আলীর মধ্যে বিরোধ চলছিল।
খাসিয়াদের দাবী ওই ভুমির মালিক ইছাছড়া পুঞ্জির মৃত মোহন খাসিয়ার ছেলে জম্পার আমলং এর, তবে প্রকৃত মালিক হিসেবে দাবী করছেন স্থানীয় মৃত আব্দুল ছত্তারের ছেলে রফিক আলী (৫৫)। এ নিয়ে মৌলভীবাজার কোর্টে একটি মামলাও করেছেন তিনি। মামলাটি বর্তমানে কোর্টে চলমান রয়েছে। কিন্তু খাসিয়াদের দাবী রফিক জোরপূর্বক ভাবে তাদের কাটাবাড়ী পানজুমটি অবৈধ দখল করে রেখেছে।
রফিক আলী ২৭ সেপ্টেম্বর জায়গাটির দখলে গেলে উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ হওয়ার আশঙ্কা হয়। এ ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর থেকে পানজুম দখল নিয়ে সংঘর্ষে বাধার সম্ভাবনা দেখা দেয়। খাসিয়া ও স্থানীয়দের মধ্যে ওই সংঘর্ষ এড়াতে সোমবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটি.এম. ফরহাদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ও র্যাব-৯ এবং পুলিশের সহায়তায় এই ভূমিতে এক অভিযান পরিচালনা করে। দখলকৃত রফিক আলীর ঘর অভিযানে ভাংচুরসহ দুই নারীকে আটক করে। আটককৃতরা হলেন মৃত আইয়ুব আলীর স্ত্রী লতিফা বেগম এবং টাট্টিউলী গ্রামের মৃত তছির আলীর স্ত্রী রুশনা বেগম । পরর্বতিতে মুছলেকা নিয়ে তাদের কে ছেড়ে দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম ফরহাদ চৌধুরী তাঁর প্রতিক্রিয়ায় জানান, রফিক মিয়া সম্পূর্ণ অবৈধভাবে পানজুম তার দখলে রেখেছিল। উচ্ছেদ অভিযানের মাধ্যমে পানজুম দখলমুক্ত করে দিয়েছি। কুলাউড়ায় এরকম অভিযান অব্যাহত থাকবে।
কমর্ধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, খাসিয়ারা পান চাষ করার জন্য নির্বিচারে গাছের মাথা কর্তন করার ফলে আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ বিনিষ্ট হচ্ছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের জন্য পরিবেশ রক্ষা করতে কথা বলতে রাজি নয় কেও। সরকারী জমি দখলমুক্ত করার ব্যাপারে প্রশাসন কে আমি ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু সরকারী জমি দখলমুক্ত করে সেই জমি আবার খাসিয়াদের দখলে কিভাবে যায় আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে রফিক আলী জানান, আমার পিতা মৃত আব্দুল ছত্তার এখানকার প্রথম বাঙ্গালী হিসেবে পাকিস্থান আমল থেকে সরকারী লিজকৃত ভুমিতে পান, সুপারি, লেবু, কাঠাল, আম, লেচু সহ বিভিন্ন ফল-ফলাদি চাষাবাদ করে আসছিল। পরবর্তিতে বংশানুক্রমে আমি উক্ত জমিতে চাষাবাদ করছি। কিন্তু খাসিয়াদেও একটি পক্ষ আমি প্রবাসে থাকা অবসস্থায় ওই জায়গাটি দখল ও ভোগ করার অপচেষ্টা করে। কিন্তু বিগত করোনা মহামারির আগে দেশে আসলে ওই ভুমিটি গত ২৭ সেপ্টেম্বর পুনরায় আমার নিজের নিয়ন্ত্রণে আনি। এর পর থেকে খাসিয়ারা ভুমিটি দখল করার চেষ্টা করলে আমি মৌলভীবাজার কোর্টে একটি মামলা করি যার নং ৮৮/২০২০ (স্বস্ত)। ওই মামলাটি কোর্টে এখনও বিচারাধীন আছে। এর মধ্যে কোন নোটিশ ছাড়াই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান করে। যা কিষের বৃত্তিতে করা হয়েছে আমি নিজেও জানি না। তবে আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন করছি বিষয়টি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে নিসপত্তি করা হোক।
এদিকে স্থানীয়দের সাথে কথা হলে তারা জানান, দাবী পুঞ্জির খাসিয়ারা পান চাষের জন্য নির্বিচারে গাছের মাথা কর্তন করে ফেলছে। আগে শীত এলে বিভিন্ন প্রকারের পাখির আবাসস্থল ছিল এই সমস্থ গাছের উপর, আর এখন কোন পাখি দেখা যায় না এক সময় এখানে অনেক হরিণ ছিল আজ তাদের কোন অস্থিত্ব নেই। শুধু তাই নয় ইউনিয়নের মুড়ইছড়া বনবিটের প্রায় তিন শত একরের উপর অবস্থিতে ইছাছড়া পুঞ্জির প্রায় কয়েক লক্ষ গাছের মাথার কোনো অস্তিত্ব মিলছে না।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ||||
৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ |
১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ |
১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ |
২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ |
Development by: webnewsdesign.com