কুলাউড়া পৌরসভার সীমানা পেরুলেই মসৃন পরিপাটি সুন্দর সড়ক।পৌরসভার বাহিরে ইউনিয়ন ও গ্রামীণ রাস্তাঘাট দেখে যে কারো কাছে সহজেই অনুমেয় হবে গ্রাম হচ্ছে শহর আর কুলাউড়া পৌরসভা হচ্ছে গ্রাম।অন্তহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে কুলাউড়া পৌরবাসী। বর্ষাকালে কর্দমাক্ত সড়ক ও শুষ্ক মৌসুমে ধূলিঝড়ে আক্রান্ত তারা। পৌরসভার প্রতিটি সড়কই খানাখন্দে ভরপুর।
এ সড়কগুলো দিয়ে চলতে গিয়ে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে যায়। বর্ষায় কর্দমাক্ত সড়ক যেমন চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়ে, তেমনি শুষ্ক মৌসুমে সড়ক থেকে উঠা ধূলো-বালি বাতাসে ভাসার কারণে চরম দুর্ভোগের শিকার হয় চলাচলকারী সাধারণ মানুষ। এ তো গেল সড়কের কথা। কুলাউড়া পৌরসভাটি কাগজে-কলমে ‘এ’ গ্রেড। যেন প্রদীপের নিচে অন্ধকার। গ্যাস, পানি সরবরাহ,অপরিকল্পিত বাড়িঘর নির্মাণ, নোংরা পরিবেশ, মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বল্পতা, খেলার মাঠ, শিশুদের বিনোদন কেন্দ্রের অভাব, যানজট, মাদকের ভয়াবহতা এবং অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠা বিভিন্ন স্থাপনাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত এ গ্রেডের পৌরসভা। ব্যবসায়ী, পৌর নাগরিক ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দের দাবি- শুধুমাত্র পৌরসভা কার্যালয়কে দ্বিতল-বিশিষ্ট দালান করা ব্যতিত অন্য কোন উন্নয়ন দৃশ্যমান হচ্ছেনা।
২৩ বছরে প্রধান সড়কেও একটি ফুটপাত নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া পৌর বাজেটের বিভিন্ন খাতের নির্দিষ্ট বরাদ্দ দেখানো হলেও তা খরচ হয় ভিন্ন খাতে, যদিও সেই খাতগুলো অস্পষ্ট। অবশ্য পৌর কর্তৃপক্ষ দাবী করছে, বাজেটের বরাদ্দকৃত অর্থ খরচ না হলে সেগুলো কোষাগারে জমা থাকে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কুলাউড়া পৌরসভার সাবেক এক কাউন্সিলর বলেন, কুলাউড়া পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে সমস্যার শেষ নেই। বড় সমস্যা পৌর এলাকায় যানজট, ফুটপাত দখল, ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই, অপরিচ্ছন্নতা, যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলাসহ গ্যাস, ডাস্টবিন ও পানি সংকট রয়েছে। সাদেপুর রোডে সংস্কারের নামে তৈরী করা হয়েছে মরণ ফাঁদ। দক্ষিণবাজার মনসুর রোডে অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অবস্থিত।
এ রোডের অবস্থা এতই নাজুক যে এই রোডে স্কুলগামী শিক্ষার্থী-অভিভাবককে প্রতিদিন নাজেহাল হতে হচ্ছে। অন্ততঃ শিক্ষার্থী অভিভাবকের কথা বিবেচনা করে যেমন পৌর কর্তৃপক্ষের নেই কোন উদ্যোগ তেমনি ট্রাফিকদের নেই কোন তদারকি।
যার যেমন ইচ্ছা তেমনি চলা, দেখার যেন কেউ নেই। সরেজমিনে দেখা যায়, ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় শহরের প্রধান সড়কেই জমে থাকছে পানি। সামান্য বৃষ্টিতেই অনেক বাসা-বাড়িতে ঢুকে যাচ্ছে পানি। নেই বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা।
গত বছর ‘এ’ গ্রেডে উন্নতি হয় কুলাউড়া পৌরসভা।যার তাপেই পৌর কর বৃদ্ধি পায়। কিন্তু সেবা বলতে কিছুই নেই। নাগরিক জীবনে এতো সমস্যা থাকার পরও পৌরকর বৃদ্ধি করা হয়েছে দ্বিগুণ।পৌরবাসীর দুঃখ লাগব হওয়ার জন্য এলাকায় উন্নয়নে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিচ্ছে সরকার।
অথচ এতো অর্থ পাওয়ার পরও হচ্ছে না দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন? রাস্তা না খাল? এ গ্রেড পৌরসভার এ কি হাল? এমন প্রশ্ন ও অপরিকল্পিত পৌরসভার উন্নয়ন নিয়ে ক্ষুব্ধ জনসাধারণ। নানা ক্ষেত্রে চরম অসুবিধার মধ্যে ধূলো খাচ্ছে নাগরিকরা।
Development by: webnewsdesign.com