সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :
অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে সুনামগঞ্জের ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে আছে।অভিযোগ রয়েছে,খানকার কাজে প্রায় দুই কোটি টাকার অনিয়ম হয়েছে।টাকার ভাগাভাগি নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় ছয় মাস ধরে কাজ বন্ধ আছে।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুর রহমান কিছু অভিযোগের জন্য কাজ বন্ধের কথা স্বীকার করে বলেন,কাজটি দ্রুত শেষ হওয়া জরুরি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,প্রায় তিন বছর আগে সুনামগঞ্জ শহরের আলীপাড়া এলাকায় স্বাস্থ্য প্রকৗশল অধিদপ্তরের আইএইচটির ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।সাড়ে তিন একর জমির ওপর ৩৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে হচ্ছে সাতটি ভবনের কাজ।কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ২০ জানুয়ারি।মেসার্স বিডিএল অ্যান্ড এমটি (জেবি) নামে ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি করছে।২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর এই ক্যাম্পাসের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো অনেক কাজই বাকি।
এদিকে,নির্মাণ কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ভবনটি উদ্বোধনের আগেই ভেঙে পড়েছে সীমানা প্রাচীরের একটি দেওয়াল।এমনকী ভবনের ডিজাইনের সময় মাটির নিচে যে পাইলিংয়ের কথা ছিল বাস্তবায়নের সময় সেটিও কমিয়ে করা হয়েছে।তাতে এক কোটি ৬০ লাখ টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।এছাড়া ভবন গুলোর চারদিকে সমান করে মাটি দেওয়া হলেও ভবনের ভেতর রয়েছে ফাঁকা।সেখানে ৩০ লাখ টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।অনিয়মের এই এক কোটি ৯০ লাখ টাকার ভাগাভাগি নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে এই ক্যাম্পাসের কাজ বন্ধ রয়েছে।
সরেজমিনে আলীপাড়া এলাকায় নির্মাণাধীন আইএইচটি ক্যাম্পাসে গেলে স্থানীয়রা জানান,হাওরাঞ্চলসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে হেলথ টেকনোলজিস্ট বাড়ানোর জন্যই সীমান্তের প্রত্যন্ত জেলা সুনামগঞ্জে আইএইচটি ক্যাম্পাস নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।দুর্নীতির কারণে এই প্রতিষ্ঠানের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।শুধু তাই নয় আইএইচটির ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ চলাকালে ভবনের নিচে ফাঁকা রাখা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পরে মাটি ভরাট করা হবে বলে জানানো হয়।এর পর ভবনের চতুর্দিকে মাটি ভরাট করা হলেও ভেতর ফাঁকা থেকে যায়।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও স্থানীয় বাসিন্দা অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম বলেন,ক্যাম্পাসের ভবন নির্মাণের সময় শুনেছি নকশায় অতিরিক্ত পাইলিং দেওয়া হয়েছে।পরে নির্মাণের সময় কম পাইলিং করা হয়।ভবনের নিচে মাটি দিয়ে ভরাট না করে ঢালাই দেওয়া হয়েছে।বাউন্ডারি দেওয়াল ধসে পড়েছে।দুর্নীতির জন্য সরকারের উন্নয়ন কাজ বন্ধ থাকবে এটা সহ্য করা যায় না।ফলে যারা এই কাজে দুর্নীতি করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির আরেক সাবেক সভাপতি চান মিয়া বলেন,৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন আইএইচটি ক্যাম্পাসে নানা অনিয়ম হয়েছে।বন্যার সময় ভবনগুলোর নিচতলায় গলা সমান পানি ছিল।এ ভবন গুলোর উচ্চতা কম করা হয়েছে।একটা সরকারি কাজে এতটা অনিয়ম মেনে নেওয়া যায় না।
এদিকে,ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আইএইচটির ক্যাম্পাসের তদারকির দায়িত্বে থাকা মো.সাইদুর বলেন,ভেতরে মাটি দেওয়া হয়েছে কি না সেটা বলতে পারবো না। কারণ আমি তখন বাড়িতে ছিলাম।আর বর্তমানে ক্যাম্পাসের কাজ বন্ধ আছে।এর বেশি কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুর রহমান বলেন,ড্রেজার দিয়ে ভবনের নিচে মাটি ঢুকানো হবে।সীমানা দেওয়াল নতুন করে করা হবে।
এছাড়া অনিয়মের অভিযোগের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন,এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সম্প্রতি রিপোর্ট জমা দিয়েছে।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | |
৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ |
১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ |
২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ |
২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |
Development by: webnewsdesign.com